আপওয়ার্ক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানুন সহজেই

আপওয়ার্ক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অনেকেরই নেই। ফ্রিল্যান্সিংএ ক্যারিয়ার গড়ার, কাজ করার চিন্তা ভাবনা থাকলেও শুধুমাত্র আপওয়ার্ক একাউন্ট খুলতে না পারার কারনে বেশিরভাগ মানুষ অনলাইনে কাজ করতে পারেন না।

আপওয়ার্ক-একাউন্ট-খোলার-নিয়ম

আজকের আর্টিকেলে আমরা আপওয়ার্ক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, সেই সাথে থাকবে গাইডলাইন। তাই আপনি যদি আপওয়ার্ক একাউন্ট খুলতে চান তাহলে আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ুন।

আরও পড়ুন: চুলের যত্নে স্বর্নলতা গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

পেজ সূচিপত্র : আপওয়ার্ক একাউন্ট খোলার নিয়ম 

    আপওয়ার্ক একাউন্ট খোলার নিয়ম 

    আপওয়ার্ক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে  বিস্তারিত জানা জরুরি কারন ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসের মধ্যে জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস "আপওয়ার্ক" এ কাজ পাওয়ার জন্য সকলেরই আগ্রহ থাকে অনেক বেশি। তাই কাজ পাওয়া, নিজের জায়গা ধরে রাখা এবং সফল হওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা চলতে থাকে প্রতিনিয়ত। একটি সঠিক, নির্ভুল এবং ভালো একাউন্ট এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আপনাকে অনেকটাই সাহায্য করবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপওয়ার্কে একাউন্ট খুলতে হয় -

    • ওয়েবসাইটে প্রবেশ : প্রথমে গুগল/ক্রোম ব্রাউজার থেকে আপওয়ার্কের ওয়েবসাইট https://www.upwork.com এ প্রবেশ করুন। (আপনি চাইলে এই লিংক থেকেও প্রবেশ করতে পারবেন) এছাড়াও আপনি প্লে স্টোর থেকে Upwork for Freelancers এ্যাপস টি ডাউনলোড করে কাজ করতে পারেন। 
    • Sign up : ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর আপনাকে সাইন আপ করতে হবে। এজন্য ওয়েবসাইটের ডান পাশে একদম উপরের "Sign Up" নামের বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর দুইটি অপশন আসবে, প্রথমটি "I'm a client" এবং দ্বিতীয়টি "I'm a freelancer" এখানে থেকে দ্বিতীয় অপশন টি সিলেক্ট করে নিচের "Apply as a freelancer" বাটনে ক্লিক করুন। এরপর একটি ফরম আসবে। 
    • ফরম পূরন : এই ফরমটি অবশ্যই ১০০% নির্ভুল তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। এখানে শুরুতে "First name " অপশনে আপনার নাম এবং "Last name" অপশনে আপনার sirname/ পদবি দিন ঠিক যেভাবে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া আছে। এরপর ইমেইল এড্রেস অপশনে একটি সঠিক এবং সক্রিয় ইমেইল এড্রেস প্রদান করুন।  
    • পাসওয়ার্ড প্রদান : ই-মেইল এড্রেস দেওয়ার পর নিচে পাসওয়ার্ড প্রদান করতে হবে। এখানে আপনাকে ৮ সংখ্যার একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড প্রদান করতে হবে। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড বানানোর জন্য আপনি ছোট হাতের অক্ষর, বড় হাতের অক্ষর, নাম্বার, চিহ্ন ব্যবহার করতে পারেন।
    আপওয়ার্ক-একাউন্ট-খোলার-নিয়ম
    • পাসওয়ার্ড প্রদানের পর "Country " বাংলাদেশ সিলেক্ট করুন। আপনি অন্য দেশ থেকে কাজ করলে এখানে সেই দেশের নাম দিতে পারেন। এরপর "Create my account " অপশনে ক্লিক করুন। 
    • ইমেইল ভেরিফিকেশন: ফরম সাবমিট করার পর ইমেল ভেরিফিকেশনের জন্য আপওয়ার্ক থেকে মেইল আসবে। আপনার প্রদত্ত ইমেইল একাউন্ট থেকে এই মেইলটি চেক করুন। মেইলে "Verify email " অপশনে ক্লিক করলেই আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হবে। 
    • ইমেইল ভেরিফিকেশনের পর একটি ইন্টারফেস শো করবে। আপনাকে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার পারমিশন নেওয়ার জন্যই মূলত এই ইন্টারফেস। এখান থেকে আপনি "Get started" বাটনে ক্লিক করবেন।
    • প্রশ্নের উত্তর দেওয়া: এরপর আপনাকে কিছু প্রশ্ন করা হবে যেমন : Have you freelanced before? এই প্রশ্নের উত্তরে আপনি নতুন হলে "I'm brand new to this" হালকা কাজ জানা থাকলে "I've some experience" আর আপনি যদি এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে "I'm an expert" সিলেক্ট করে নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন। এরপরে প্রশ্ন : How would you like to work?  এর উত্তরে I'd like to find opportunities myself ক্লিক করে নেক্সট করুন। 
    • এরপরের কাজটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হলে একটি ইন্টারফেস আসবে যেখানে আপনার নিজের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করতে হবে। কোনো একাউন্ট লিংক করতে চাইলে এই পর্যায়ে আপনি তা করতে পারেন। তারপর Fill out manually অপশনটি ক্লিক করে নেক্সট ধাপে চলে যান। 
    • এখন আপনি যে বিষয়ের উপরে কাজ করতে চান তা সিলেক্ট করুন। Your professional role অপশনের নিচের বক্সে আপনার কাঙ্ক্ষিত বিষয় যেমন :  গ্রাফিক্স ডিজাইন, কোডিং, মার্কেটিং, ব্লগিং ইত্যাদি সিলেক্ট করুন যে বিষয়ে আপনার দক্ষতা আছে আপনি কাজ করতে চান।
    • Experience add: আপনার যদি অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে সেই বিষয়ের বিস্তারিত তথ্য এখানে প্রদান করবেন। আর যদি আপনি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে যে বিষয়ে কাজ করতে চান সেই বিষয়ের কিছু প্রাথমিক তথ্য এখানে দিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা জানাবেন যদিও এটি ভেরিফাই করা হবে না। 
    • আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা বর্ননা করে পরের ধাপের ফর্মটি পূরন করুন। এরপর ভাষা সিলেক্ট করে পরের ধাপে গিয়ে নিজের বায়ো লিখুন। এক্ষেত্রে আপনি কয়েকটি একাউন্ট থেকে তাদের বায়ো পড়ে একটি ধারনা নিতে পারেন। যখন একজন ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল ভিজিট করবে তখন আপনার বায়ো তাকে আকৃষ্ট করবে এবং সে কাজ দেওয়ার জন্য আপনাকে সিলেক্ট করবে। তাই বায়ো নির্ভুল এবং আকর্ষণীয় হওয়া জরুরী। 
    • আপনি কত রেটে কাজ করতে চান, কিভাবে কাজ করবেন এমন সব খুটিনাটি বিষয়ে তথ্য দিয়ে পরের ধাপে প্রোফাইল ইডিট করুন। প্রোফালে আপনার ছবি আপলোড করতে হবে। ছবি আপলোড করার পর আপনার কান্ট্রি, ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার দিয়ে রিভিউ ইনফরমেশন বাটনে ক্লিক করলেই আপনার প্রোফাইল তৈরি হয়ে যাবে এবং আপনার দেওয়া সব তথ্য এখানে শো করবে। আপনার যদি কোনো তথ্য ইডিট করতে হয় তাহলে এই ধাপে আপনি তা করতে পারেন। অতঃপর সব ঠিকঠাক থাকলে সাবমিট প্রোফাইল বাটনে ক্লিক করলেই আপনার একাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। 
    আপওয়ার্কে কাজ করার জন্য একাউন্ট সঠিক ও আকর্ষণীয় হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনি যদি কোনো বিষয়ে না বোঝেন তাহলে অভিজ্ঞ কারো কাছে একাউন্ট খুলে নেওয়াই শ্রেয় হবে। একাউন্ট খোলার পর জব সার্চ করে আপনি আপনার কাজ শুরু করতে পারেন!

    কিভাবে আপওয়ার্ক একাউন্ট এপ্রুভ পাওয়া যায় 

    আপওয়ার্কে একাউন্ট এপ্রুভ পাওয়া একাউন্ট খোলার মতো সহজ নয়। সঠিকভাবে একাউন্ট এপ্রুভ করতে হলে আপনার আসল নাম স্পষ্ট করে লিখতে হবে, পেশাদার প্রোফাইল নির্বাচন করতে হবে, আপনার কোন কোন বিষয়ে দক্ষতা আছে এগুলোও স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে এবং কোন কাজ যদি আগে থেকেই করে থাকেন সেটাও উল্লেখ করতে হবে যেমন ডিজাইন লেখা বা মার্কেটিং।

    প্রফেশনাল ভাবে বায়োডাটা তৈরি করুন, সঠিক ক্যাটাগরি ও নমুনা কাজ দিন, প্রতি ঘন্টা কাজের রেট, টাইম জোন ও কাজের ধরন ঠিকমতো পূরণ করুন। যতগুলো তথ্য দেওয়া হবে সবগুলোই যদি সত্য হয় তাহলে প্রথমবারেই একাউন্ট এপ্রুভ হওয়া সম্ভব।
    সহজে বুঝার জন্য বলতে গেলে বলা যায় প্রোফাইল যত স্পষ্ট প্রফেশনাল এবং আকর্ষিত হবে এপ্রুভ তত তাড়াতাড়ি হবে।

    আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস কী

    আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস কি বিষয়টি অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়। আর্টিকেলের শুরুতে আমরা আলোচনা করেছি আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে আর এই অংশে আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস নিয়ে প্রাথমিক ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করব।

    কল্পনা করুন আপনি একটি ছোট ঘরে বসে আছেন চারিদিকে নিরবতা, কেবল একটি স্মার্টফোনের বা ল্যাপটপ আপনার সঙ্গী। আপনি সেই ঘর থেকেই যুক্ত হচ্ছেন নিউওয়ার্ক, লন্ডন বা টোকিওর কোন ব্যবসার সাথে। এটা আগে অসম্ভব মনে হলেও বর্তমানে সম্ভব  করে তুলেছে যে  প্লাটফর্মটি সেটি হলো আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস। দক্ষতা অভিজ্ঞতা আর একটু সাহস থাকলেই  আপনি এই প্লাটফর্মে তৈরি করতে পারবেন নিজের জন্য একটি স্বাধীন কর্মজীবন। 

    আপওয়ার্ক হলো এক ধরনের গ্লোবাল ফ্রিল্যান্সিং বাজার, যেখানে ক্লাইন্ট (যিনি কাজ দেন) এবং ফ্রিল্যান্সার (যে কাজ করে) একে অপরকে খুঁজে পায়। আপনি যদি কিছু জানেন-  লিখতে পারেন, ডিজাইন করতে পারেন, কোডিং করতে পারেন, এডিটিং করতে পারেন বা শুধুই টাইপ করতেও দক্ষ হন ,তাহলে আপনার জন্যই এখানে আছে হাজার হাজার কাজের সুযোগ। 

    ২০০৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাম্পবেলে এটি "ওডেক্স" নামে প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং ২০১৫ সালে নাম পরিবর্তন করে আপওয়ার্ক রাখা হয়। ২০২২ সালে ইন্টারন্যাশনাল টাইমস ম্যাগাজিনের সেরা ১০০ কোম্পানির তালিকায় ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হিসেবে আপওয়ার্ক জায়গা করে নেয় এবং বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করে। বর্তমানে আপওয়ার্কে বিশ্বের ১৮০টি দেশের ১.৮ রেজিস্টার্ড ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং করা যায় এরকম সব ক্যাটাগরি সহ প্রায় ৪ লাখের অধিক প্রজেক্ট দিয়ে আপওয়ার্ক সাজানো আছে। 

    এটা এমন একটা প্লাটফর্ম যেখানে সিভি নয় বরং আপনার দক্ষতা আত্মবিশ্বাস আর কাজের মান দিয়েই আপনার পরিচয় তৈরি হয এবং এখানে গ্লোবাল কাজ করে শুধু আয় করাই সম্ভব নয়, বরং অনেকের জন্য একটি নতুন জীবনের সূচনা হয়। 

    আপওয়ার্কে কিভাবে কাজ পাওয়া যায়

    আপওয়ার্কে কিভাবে কাজ করতে হয় এটা নিয়ে নতুনদের একটু সমস্যা হয় কারন তারা সঠিক নিয়ম জানে না তাই কাজও পায় না। এখন আমরা জানব আপওয়ার্কে কিভাবে কাজ পাওয়া যায়। 

    আপওয়ার্কে কাজ  পাওয়ার কয়টি ধাপ রয়েছে, এরমধ্যে সর্বপ্রথম ধাপ হলো একটি ভালো প্রোফাইল তৈরি করা। আপনি কি কাজ করতে চান আপনি কি কাজে অভিজ্ঞ, আপনার ভাষাজ্ঞান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, আকর্ষণীয় বায়ো, টাইটেল, প্রফেশনাল ওভারভিউ ও প্রোফাইল পিকচার সম্বলিত একটি নিখুঁত  প্রোফাইল স্পষ্ট করে ফুটে তুলতে হবে যেন আপনার ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল দেখেই বুঝতে পারে আপনি কাজটি পাওয়ার যোগ্য এবং পার্ফেক্ট ভাবে করতে পারবেন।

    দ্বিতীয় ধাপে আপনাকে একটা ডেমো তৈরি করতে হবে আপনার যদি আগের কোন কাজের অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে একটা কাজ বানিয়ে প্রোফাইলে যুক্ত করতে হবে তাহলে ক্লাইন্ট দেখে বুঝতে পারবে যে আপনি এই বিষয়ে কাজটা জানেন। 

    তৃতীয় ধাপ হলো স্কিল অনুযায়ী কাজ সার্চ করা। আপওয়ার্কে প্রত্যেকদিন নতুন নতুন কাজ আসে, এজন্য আপওয়ার্কের Find work সেকশনে গিয়ে আপনার  স্কিল অনুযায়ী (যেমন: Data entry, graphics design,Translation Bengali to English, Coding, Marketing ইত্যাদি) সার্চ করতে হবে। এরপর প্রত্যেকটি কাজের অফারের বিস্তারিত তথ্য, রেট এবং ক্লায়েন্ট ডিটেইলস যাচাই-বাছাই করে কাজ করার জন্য প্রপোজাল বা অ্যাপ্লিকেশন দিতে হবে। আমরা জানি যে কোন কাজ শুরু করতে হলে ছোট থেকে শুরু করতে হয় ঠিক এখানেও আগে ছোট ছোট কাজ শুরু করলে রিভিউ বাড়বে আস্তে আস্তে বড় কাজ শুরু করতে হবে। এজন্য আপনি শুরুতে রেট কম রাখতে পারেন এটি আপনার কাজ পাওয়া ও রেটিং নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।

    চতুর্থ ধাপে আপনি প্রপোজাল দিবেন ক্লায়েন্টের একাউন্টে। যে কাজটি করার জন্য আপনি মনস্থির করেছেন সেটা ওপেন করে "Submit Proposal "  বাটনে ক্লিক করুন। এরপর আপনি কেন এই কাজটির জন্য উপযুক্ত সেটা ২-৩ টি প্যারাগ্রাফে সুন্দর করে বর্ণনা করে একটি কভার লেটার লিখুন। তারপর আপনার রেট বসিয়ে সাথে যদি কোনো ফাইল দিতে চান (আগের কাজের নমুনা) "Attach file" অপশনে ফাইল সিলেক্ট করে সবকিছু কমপ্লিট করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে সাবমিট করুন।

    পঞ্চম ধাপ হলো ক্লাইন্ট অর্থাৎ যে আপনাকে কাজ দেবে তার সঙ্গে সুন্দরভাবে কথা বলা। আপনার অফার লেটার যদি ক্লায়েন্ট পেয়ে থাকে তাহলে আপনাকে নক করবে। যখন ক্লাইন্ট আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাইবে তখন দ্রুততার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এতে ক্লাইন্টের কাছে আপনাকে পছন্দ হবে এবং আপনাকে বারবার কাজ দিতে চাইবে। 

    যদি কেউ সুন্দর করে প্রোফাইল তৈরি করে এবং সঠিক সময় এপ্লাই করে এবং ক্লাইন্ট যেভাবে চায় সেভাবে কাজ করে তাহলে আপওয়ার্কের মাধ্যমে দৈনন্দিন কাজ পাওয়া সম্ভব। 

    আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসে কখন কাজ শুরু করব

    আপওয়ার্ক  মার্কেটপ্লেসে কখন কাজ শুরু করবেন এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে কারন আপওয়ার্ক হলো একটি ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম  যেখানে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ফ্রিল্যান্সার যুক্ত থাকে কাজ করার জন্য।   তাই মনে রাখতে হবে এটা হচ্ছে একটা প্রতিযোগিতার প্ল্যাটফর্ম  যেই একবার এই প্লাটফর্মের গতিবিধি বুঝতে পারবে সেই এগিয়ে যাবে, ভালো ইনকাম করতে পারবে এবং সফল হবে। কখন আপওয়ার্কে কাজ করবেন --
    • স্কিল বা দক্ষতা বৃদ্ধি: আপনি যদি এমন কোন কাজে অভিজ্ঞ হন যার চাহিদা আপওয়ার্কে আছ  তাহলে আপনি কাজ শুরু করতে পারেন যেমন ভিডিও এডিটিং,গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি । এগুলো যদি নিজে রিয়েল প্র্যাকটিস করে থাকেন তাহলেই আপনি এই কাজ শুরু করতে পারেন।
    •  প্রফাইল প্রস্তুত : কাজ শুরু করার পূর্বে কাজ পাওয়ার জন্য সবচাইতে বেশি ভূমিকা পালন করে প্রোফাইল। আপনাকে প্রোফাইলটা এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যখন কোন ক্লাইন্ট আপনার প্রোফাইল দেখবে সাথে সাথেই যেন সে বুঝতে পারে যে আমার সমস্যার সমাধান এখানেই হবে। একটি প্রফেশনাল প্রোফাইল, ভালো টাইটেল ,এবং ভালো ডিস্ক্রিপশন থাকলে আপওয়ার্কে আপনি কাজ শুরু করতে পারেন।
    • মানসিক প্রস্তুতি: ধৈর্য, এই প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারের সফল হওয়ার মূল অস্ত্র হচ্ছে ধৈর্য কারণ ধৈর্য ছাড়া এই প্লাটফর্মে কখনোই সফলকাম হওয়া যাবে না। এখানে সাথে সাথে কাজ পাওয়া সম্ভব হয় না মাঝে মাঝে ৩০-৪০ টা প্রস্তাব পাঠানোর পরেও কাজ পাওয়া যায় না কিন্তু এই সময় যদি আপনি ধৈর্যহারা হন আর যদি ভাবেন যে আমার দ্বারা এখানে হবে না তাহলে আপনার এখনো কাজ শুরু করার সময় হয় নাই। এই সময়গুলোতে যদি আপনি ধৈর্য ধরতে পারেন তাহলে আজই আপনি আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করতে পারেন।

    আপওয়ার্ক থেকে ইনকাম করার সহজ উপায়

    আপওয়ার্ক থেকে ইনকাম করার কথা উঠলেই অনেকেই ভয় পায় তারা মনে করে এত বড় প্ল্যাটফর্ম থেকে কিভাবে ইনকাম করব। কিন্তু আসল কথা হল যারা সঠিক উপায়ে কাজ করে তাদের জন্য ইনকাম করা অনেক সহজ।আপওয়ার্ক থেকে ইনকামের সহজ উপায় হল --
    • প্রোফাইল তৈরি : নিজেকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা এবং কৌশল করে কাজ খোঁজা। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে আমরা যতই কাজ পারি না কেন ওই কাজটা যদি ক্লাইন্টকে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে না পারি তাহলে আমরা কখনোই ইনকাম করতে পারবোনা। এইজন্য আমাদের প্রোফাইলটা এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যাতে করে ক্লায়েন্টের কাছে আমরা বিশ্বস্ত হতে পারি এবং তার দেওয়া কাজ করার মাধ্যমে আমরা ইনকাম করতে পারি।
    • সাধারণ স্কিল দিয়ে কাজ শুরু করা: যেসব কাজের চাহিদা বেশি সেসব কাজে স্কিল ডেভেলপ করতে পারলে খুব সহজেই আপওয়ার্কে কাজ পাওয়া যাবে। যেমন: Data entry, Video editing, Digital marketing, Web research, Social media posts, Translating, Coding, Graphic design ইত্যাদি কাজের চাহিদা সারা বিশ্বে অনেক বেশি। 
    • নিয়মিড বীড করা: আপওয়ার্ক থেকে টাকা ইনকাম না হওয়ার অন্যতম বাধা হলো আমরা যেই কাজ করি না কেন সেটা ক্লাইন্টকে বোঝাতে পারিনা। আপনি যদি প্রতিদিন পাঁচটি করে বীড তৈরি করে ও কপি পেস্ট না করে কাস্টমাইজ করে ক্লায়েন্টকে পাঠান এবং সুন্দর করে বুঝিয়ে দিতে পারেন তাহলে এখান থেকে আপনি সহজেই কাজ পাবেন ও ইনকাম করতে পারবেন। 
    • নিয়মিত অনলাইনে থাকা ও ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট রাখা: ক্লায়েন্টের কোনো প্রয়োজনে যদি আপনাকে নক করে এবং আপনি তাতে সাড়া দিতে না পারেন তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ক্লায়েন্ট আপনার উপর অসন্তুষ্ট থাকবে। তাই নিয়মিত অনলাইনে থাকতে হবে, ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করতে হবে, ক্লায়েন্টের নির্দেশনা মেনে সঠিকভাবে কাজ করে ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট করতে হবে তাহলেই আপওয়ার্কে সহজে ইনকাম করা যাবে।

    আপওয়ার্ক থেকে টাকা তোলার উপায় 

    আপওয়ার্ক থেকে টাকা তোলার উপায় না জানার কারনে অনেকেই বিশেষ করে নতুনরা বিভ্রান্তিতে পড়ে। কিন্তু আপনি চাইললে খুব সহজেই এই একাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারেন কয়েকটি মাধ্যমে--
    আপওয়ার্ক-থেকে-টাকা-তোলার-উপায়
    ব্যাংক একাউন্ট : আপওয়ার্ক প্রোফাইলে আপনার নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টের তথ্য প্রদান করলে পেমেন্ট রিকোয়েস্ট দেওয়ার ২-৩ দিনের মধ্যে অটোমেটিক টাকা জমা হবে একাউন্টে।

    স্ক্রিল একাউন্ট : স্ক্রিল একাউন্ট ক্রিয়েট করে আপওয়ার্ক থেকে ডলার পেমেন্ট নেওয়া যায় স্ক্রিলে। এরপর আপনি চাইলে ডলার সেল করতে পারেন অথবা নিজের ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি ডলার কনভার্ট করে টাকা নিতে পারেন।

    পেয়নিয়ার : এটিও স্ক্রিলের মতো অনলাইন একাউন্ট কিন্তু বিশেষত্ব হচ্ছে এর সাথে আপনি ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড পাবেন যা দিয়ে খুব সহজেই ATM বুথ থেকে টাকা তুলতে পারবেন।

    কিভাবে আপওয়ার্কে ভালো বীড পাওয়া যায়

    আপওয়ার্কে সফল হতে হলে শুধু একাউন্ট থাকাই যথেষ্ট নয় দরকার ভালো বীড দেওয়ার। কিন্তু ভালো বীড বলতে কি বুঝায় ভালো বিট কিভাবে দিতে হয় এটা আমরা অনেকেই জানিনা। আমরা মনে করি ভাল বীড মানে হল "আমি জানি" এটুকুই বলা। আসলে ব্যাপারটা এমন নয়। ভালো বীড হলো এমন এক প্রস্তাব বা এমন এক উপস্থাপনা যেটা দেখে ক্লাইন্ট বলে যে একেই তো আমি খুজছিলাম। 

    প্রথমে কাজটি বুঝুন তারপরে কাজের পোস্টারটা ভালো করে দেখুন ক্লাইন্ট কি চেয়েছে তার সমস্যাটা কোথায় খুঁজে বের করুন। এরপর আপনার বীড শুরু করুন সেই সমস্যা সমাধানের কথা দিয়ে। যেমন আপনি সরাসরি ক্লাইন্টকে বলছেন আপনার ওয়েবসাইট লোড বেশি নিচ্ছে যার কারণে আপনি গ্রাহক হারাচ্ছেন আমি এমন ভাবে এটা কাজ করব যে দুই সেকেন্ডের বেশি লোড নিবে না। এভাবে  সমাধানভিত্তিক বীড ক্লাইন্টকে আকর্ষিত করে।

    কি কি কারনে আপওয়ার্কে একাউন্ট বাদ পড়ে যায়

    কি কি কারনে আপওয়ার্ক একাউন্ট বাদ পড়ে যায় তা খেয়াল রাখা জরুরি।মাঝে মাঝে হঠাৎ করেই কাজ করতে করতেই একাউন্ট বন্ধ হয়ে যায় তখন আমরা সবাই টেনশনে পড়ে যাই যে কেন আমার একাউন্ট বন্ধ হয়ে গেল বা বাদ পড়ে গেল। অ্যাকাউন্ট বা কাজ করার পূর্বে অবশ্যই আমাদেরকে এগুলো বিষয়ে জানতে হবে কেন একটা একাউন্ট বন্ধ বা বাদ পড়ে যায়। একটা অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড হওয়ার বহু তথ্যবহুল কারণ আছে যেগুলো আমরা নিম্নে সংক্ষিপ্তভাবে জানার চেষ্টা করব--
    • আপনি যদি একই বীড বিভিন্ন ক্লাইন্টকে দেন এবং এটা যদি আপওয়ার্ক সিস্টেম জানতে পারে তাহলে আপনার একাউন্ট বন্ধ করে দিতে পারে।
    • আপনি যদি কোন কনটেন্ট কোন আর্টিকেল এক কথায় কোথাও থেকে কপি করে পেস্ট করে দেন অথবা কারো কোন কপিরাইট চুরি করে ব্যবহার করেন এর কারণেও অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। 
    • কেউ নিজের প্রচারের জন্য প্রোফাইলে ভুয়া তথ্য প্রদান করলে ক্লাইন্ট যদি তার বিরুদ্ধে রিপোর্ট দেয় তাহলে এর কারণেও একাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। 
    • আপওয়ার্কে যে ইনকাম হয় সেটা আপওয়ার্কের মাধ্যমেয় গ্রহণ করতে হয় কিন্তু যদি কেউ অন্য কোন মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে চায় যেমন বিকাশ বা প্যেপল তখন আপওয়ার্কের নিয়ম লঙ্ঘন করার কারনে অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যায়।

    লেখকের শেষ কথাঃ আপওয়ার্ক একাউন্ট খোলার নিয়ম 

    আপওয়ার্ক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পাশাপাশি আমরা আরও বেশ কিছু বেসিক জিনিস নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করেছি যেমন আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস কি, এখানে কিভাবে কাজ পাওয়া যায়, কখন এখানে কাজ করা যায়, সহজে ইনকাম করার উপায় ইত্যাদি।

    আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কাজ করতে চান এবং নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি অবশ্যই আপনার উপকারে আসবে। ফ্রিল্যান্সিং, অনলাইন ইনকাম ইত্যাদি বিষয়ে জানার থাকলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন অথবা কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। 

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    ফ্রিলার্নিং আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url