বর্তমানে বাংলাদেশ টু শ্রীলঙ্কা বিমান ভাড়া কত সহজেই জানুন

বর্তমানে বাংলাদেশ টু শ্রীলঙ্কা বিমান ভাড়া কত? আপনি কি এই প্রশ্নের উত্তর খুজছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতেই এসেছেন। আমরা আপনাকে এই জানাব বাংলাদেশ টু শ্রীলঙ্কা বিমান ভাড়া কত, কিভাবে আবেদন করবেন, কত টাকা খরচ হবে ইত্যাদি বিষয়ে খুটিনাটি। 
বাংলাদেশ-টু-শ্রীলঙ্কা-বিমান-ভাড়াআপনার কি চাকরির খোঁজে, ব্যবসায়িক কোনো কাজে কিংবা ঘুরতে যাওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কায় যাওয়া প্রয়োজন? কিভাবে কম সময়ে শ্রীলঙ্কার ভিসা পাবেন, দালালের প্রতারণা থেকে বেঁচে নিশ্চিন্তে শ্রীলঙ্কা যাবেন সেই বিষয়ে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পেজ সুচিপত্রঃ বর্তমানে বাংলাদেশ টু শ্রীলঙ্কা বিমান ভাড়া কত

বাংলাদেশ টু শ্রীলঙ্কা বিমান ভাড়া কত

বাংলাদেশ টু শ্রীলংকা বিমান ভাড়া কত টাকা ধরা হবে তা বিভিন্ন বিষয় যেমন ফ্লাইট এর ধরন, আপনি কেমন ধরনের টিকিট নিবেন, কোন সিজনে আপনি যাচ্ছেন এসবের উপরে নির্ভর করে। অবাক হচ্ছেন জেনে? চলুন বিস্তারিত বুঝিয়ে বলি যাতে আপনার কাছে বিষয়টা সহজ হয়ে যায়!

সাধারণত বাংলাদেশের ঢাকা থেকে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিমান চলাচল করে। এদের একেক বিমানে ভাড়া একেক রকম। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য বিমান ফ্লাইট হলো শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স। এই বিমানের টিকেট ভাড়া তুলনামূলক বেশি হলেও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা অন্য বিমানের তুলনায় যথেষ্ট ভালো। তাই বেশিরভাগ মানুষ একটু বেশি টাকা খরচ করে হলেও শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইনসে ঢাকা থেকে কলম্বো যেতে চান।

এখানে ফ্লাইটের টিকেট ভাড়া তারিখ, ক্লাস ও টিকেটের ধরন অনুযায়ী ৬০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। আপনি যদি রাউন্ড ট্রিপের টিকেট নিতে চান অর্থাৎ শ্রীলঙ্কা যাওয়া এবং আসার টিকেট একসাথে নিতে চান তাহলে ইকোনমিক ক্লাসে টিকেট ভাড়া পড়বে ১,১৫,০০০ টাকা প্রায় (শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইনসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের আজকের তথ্যানুযায়ী)। আর যদি শুধু মাত্র এক ট্রিপের টিকেট নিতে চান (শুধু যাওয়া কিংবা আসা) তাহলে দাম পড়বে প্রায় ৬৫,০০০-৮০,০০০ টাকার মধ্যে। এই দাম সময়ের সাথে কম বেশি হতে পারে। আপনি যদি টুরিস্ট ভিসায় শ্রীলঙ্কা যেতে চান তাহলে আপনার এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করলেই প্রক্রিয়াটা সহজ হয়ে যাবে। আবার আপনি যদি ট্যুর প্যাকেজ বুক করেন তাহলে প্যাকেজের সাথেই বিমান ভাড়া অন্তর্ভুক্ত থাকবে। 

বাংলাদেশ টু শ্রীলঙ্কা বিমান ভাড়া চেক

বাংলাদেশ টু শ্রীলঙ্কা বিমান ভাড়া চেক করতে জানলে আপনি চাইলে ঘরে বসে খুব সহজেই মোবাইলের মাধ্যমেই বাংলাদেশ টু শ্রীলংকা বিমান ভাড়া চেক ও বুকিং করতে পারেন। এজন্য আপনাকে যা করতে হবে তা ধারাবাহিকভাবে নিচে আলোচনা হলো, এই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করলেই আশা করা যায় আপনি অন্যকারো সাহায্য ছাড়াই বাংলাদেশ টু শ্রীলঙ্কা বিমান ভাড়া চেক করতে পারবেন।

প্রথমেই শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট  https://www.srilankan.com/  লিংকে প্রবেশ করুন। এখানে ঝামেলা ছাড়াই আপনি তাদের সার্ভিস উপভোগ করতে পারবেন। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই হোমপেজে টিকিট চেক এবং বুকিং করার অপশন দেখা যাবে। এখান থেকে প্রথমেই From অপশনে ঢাকা- বাংলাদেশ সিলেক্ট করুন এবং To অপশনে কলম্বো- শ্রীলংকা সিলেক্ট করুন। তারপর Departure Date অপশনে আপনি যে তারিখে ভ্রমণ করতে চান সেই তারিখ ক্যালেন্ডার থেকে সিলেক্ট করুন এবং আপনি যদি রিটার্ন টিকিটও একই সাথে বুক করতে চান তাহলে যে তারিখে রিটার্ন ফ্লাইট করবেন (যে দিন শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে ফেরত আসতে চান) সে তারিখ সিলেক্ট করুন। যারা ভিজিট ভিসায় শ্রীলঙ্কা যেতে চান তারাই মূলত রিটার্ন টিকেট করে থাকেন। 

এরপর আপনার টিকিটের ক্লাস সিলেক্ট করুন এবং কতজন যাত্রীর জন্য টিকেট নিতে চান তা প্রদান করুন। ১২ বছরের নীচের কোনো শিশু যদি আপনার সাথে যায় তাহলে তার ভিসা লাগবে না, তাই তাকে বাদ দিয়ে হিসেব করুন। সাধারন যাত্রীরা "ইকোনমিক" ক্লাসের সীটে যাতায়াত করে থাকেন, এই সীটে টিকেট প্রাইস তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। এরপর রাউন্ড ট্রিপ হলে রাউন্ড ট্রিপ বাটন সিলেক্ট করুন আর ওয়ানওয়ে হলে ওয়ান ওয়ে বাটন সিলেক্ট করে সার্চ অপশন এ ক্লিক করলেই আপনার সামনে বিস্তারিত তথ্য চলে আসবে। এখান থেকে আপনি যদি আপনার নির্ধারিত দিনের টিকিট পেয়ে যান তাহলে পরবর্তী নির্দেশনা অনুসরণ করে টিকিট বুক করে ফেলতে পারেন।
টিকেট বুকিং, ভিসা প্রসেসিং অনেক ঝামেলাপূর্ণ হওয়ায় সবাই এই কাজটা করতে পারে না। তাই বিভিন্ন এজেন্সির সহায়তা নিয়ে থাকেন। আপনিও যদি ভিজিট ভিসা, মেডিকেল ভিসা বা কোনো টেম্পোরারি ভিসায় শ্রীলঙ্কা যেতে চান তাহলে এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করলেই বেশি ভালো হবে।

বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কা ভিসা পাওয়ার নিয়ম

বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কা ভিসা পাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ছোট এই দ্বীপ রাষ্ট্রে ঘুরতে যাওয়ার জন্য অনেকেই আগ্রহী থাকেন কিন্তু কিভাবে ভিসা পাওয়া যাবে তা না জানার কারনে যেতে পারেন না। ঝামেলা এড়াতে বেশিরভাগ মানুষ এজেন্সি বা ট্যুর গাইডের সাথে যান শ্রীলঙ্কা। আবার অনেকে কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা দালালের হাতে দিয়ে প্রতারিত হন। আপনি যদি একা একা শ্রীলঙ্কা ভিসা পাওয়ার নিয়ম জানেন তাহলে খুব সহজেই স্বল্প খরচে এবং প্রতারিত না হয়েই যেতে পারবেন শ্রীলঙ্কা। চলুন জেনে নেই নিয়ম সম্পর্কে। 

ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে আবেদন করতে হবে। আবেদন আপনি দুভাবে করতে পারেন, নিজে নিজে অনলাইনে অথবা সরাসরি বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কান হাই কমিশনে গিয়ে। 

চলুন প্রথমে অনলাইনে আবেদনের নিয়ম জানিঃ 
অনলাইনে আবেদন করার জন্য আপনাকে https://www.eta.gov.lk ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এটা শ্রীলঙ্কার ইমিগ্রেশন অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং যেকেউ এখানে প্রবেশ করতে পারবে। এরপর ওয়েবসাইটের হোমপেজের মেনুবার থেকে "Apply" বাটনে ক্লিক করে অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম চলে আসবে এখান থেকে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য যেমনঃ আপনার নাম (সার্টিফিকেট অনুযায়ী), জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, ভ্রমণের তারিখ, ভ্রমণের উদ্দেশ্য ইত্যাদি পূরণ করুন। খেয়াল রাখতে হবে তথ্য যেন সঠিক হয়, ভুল তথ্য দিলে ভিসা পেতে সমস্যা হবে।

এরপরে আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র স্ক্যান  করে সংযুক্ত করে সাবমিট করলেই আবেদন সম্পন্ন হবে। আবেদনপত্র সাবমিট করার পরে ফি পরিশোধ করতে হবে। ওয়েবসাইট থেকে আপনার কাঙ্খিত  ভিসার ফি জেনে নিয়ে প্রদত্ত ব্যাংকিং একাউন্টে পরিশোধ করুন। এরপর একটি ভেরিফিকেশন ইমেইল আসবে, ইমেইল ভেরিফিকেশন করার পরে আবেদন পত্রটি ডাউনলোড করে নিলেই আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে।

অফলাইনে আবেদন করার নিয়মঃ
অফলাইনে বা সরাসরি আবেদন করার জন্য আপনাকে ঢাকায় অবস্থিত শ্রীলংকার হাই কমিশনে যোগাযোগ করতে হবে। (প্রশ্নত্তর পর্বে ঠিকানা দেওয়া আছে, চেক করে নিতে পারেন) আপনি নিজে গিয়েও যোগাযোগ করতে পারেন অথবা তাদের কোন মাধ্যম (এজেন্সি বা রিপ্রেজেন্টেটিভ) এর সাথে কথা বলেও আপনি কাজটি করতে পারেন। এজেন্সি থেকে ভিসা নিতে চাইলে তারা আপনার আবেদনসহ ভিসা প্রসেসিং এর সকল কাজ করে দেবে তাহলে আপনাকে কিছুই করতে হবে না। কিন্তু আপনি যদি নিজে থেকে করতে চান তাহলে আপনাকে সরাসরি হাই-কমিশনে যেতে হবে।

হাইকমিশনে গিয়ে প্রথমেই ভিসার জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে এবং যথাযথভাবে আবেদনপত্র পূরণ করার পর এর সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ভিসা ফি দিয়ে জমা দিতে হবে। অনলাইনে আবেদন করা যতটা সহজ এবং দ্রুত অফলাইনে আবেদন করা ততটাই সময় সাপেক্ষ তাই হাইকমিশন থেকে ভিসা প্রসেসিং এর জন্য কিছু সময় লাগতে পারে। এজন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে এবং আপনার কাঙ্খিত তারিখের অনেক আগেই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। নতুন হলে এসব কাজ করতে অনেক ঝামেলা মনে হতে পারে তাই অভিজ্ঞ কাউকে সাথে নিতে পারেন।

ভিসার আবেদন করার কিছুদিনের মধ্যে আপনাকে ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকা হবে। ইন্টারভিউয়ে সাধারণত আপনার ভ্রমনবৃত্তান্ত (ভিজিট ভিসার ক্ষেত্রে ট্যুর প্ল্যান, রিজার্ভ করা হোটেলের ঠিকানা, ট্যুর গাইডের বিস্তারিত তথ্য, কতদিন অবস্থান করবেন এসব আর কাজের ভিসার জন্য ওয়ার্ক ও রেসিডেন্স পারমিট ইত্যাদি) বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হবে। সফলভাবে ইন্টারভিউ শেষ হলে ২/৩ দিনের মধ্যেই আপনাকে মেইল অথবা মেসেজে ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হবে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ২০-২৫ দিন সময় লাগতে পারে। তাই যথেষ্ট সময় হাতে রেখে আবেদন করুন, কাঙ্ক্ষিত সময় এর মধ্যেই ভিসা পেয়ে যাবেন।

শ্রীলঙ্কা ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

শ্রীলঙ্কা ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র , আপনি কি শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার জন্যে ভিসা আবেদন করবেন কিন্তু কি কি কাগজপত্র লাগবে জানেন না? তাহলে এই লেখাটি মনজগ দিয়ে পরুন। কেননা ভিসা আবেদন করার সময় এসব কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে এবং নির্ভুল কাগজ না হলে ভিসা পেতে অনেক সমস্যা হয়। শ্রীলঙ্কা ভিসার জন্য কাগজপত্র নির্ভর করে ভিসার ধরনের উপর। আপনি যে উদ্দেশ্যে শ্রীলঙ্কা যাবেন সেটার সাথে সম্পর্কিত কাগজপত্র প্রয়োজন হবে আপনার। 

ভিজিট ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ  
প্রথমেই লাগবে ভিসা আবেদনপত্র। সরাসরি আবেদন করলে এটি হাইকমিশন থেকে পাবেন আর অনলাইনে আবেদন করলে আবেদনপত্র দাউনলয়াদ করতে হবে।এরপর বৈধ পাসপোর্ট লাগবে (কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদি এবং ভিসার জন্য পর্যাপ্ত খালি পৃষ্ঠা আছে এমন পাসপোর্ট) , পাসপোর্ট সাইজের ছবি (যতজন যাবেন প্রতিজনের নির্দিষ্ট সংখ্যক করে), হোটেল রিজার্ভেশন, ইনভাইটেশন লেটার ইত্যাদি সংবলিত ট্যুর প্ল্যান, ব্যাংক স্টেটমেন্ট (ভ্রমনের খরচ বহনের আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণস্বরুপ), রিটার্ন টিকেট (ফিরতি বিমানের টিকেট) জাতীয় পরিচয়পত্র / জন্ম সনদ। এসব কাগপজপত্র অবশ্যই ভিসা আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত করে ভিসা অফিসে জমা দিতে হবে।

শ্রীলঙ্কা কাজের ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
শ্রীলংকায় লং টার্ম ভিসার জন্যে অতিরিক্ত কিছু কাগজ লাগে। লং টার্ম ভিসার মধ্যে কাজের ভিসা অন্যতম। এই ভিসার জন্যেও ভিজিট ভিসার মত বৈধ পাসপোর্ট, ছবি, ব্যাংক স্তাত্মেন্ত লাগবে। এর সাথে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা লাগবে। ওয়ার্ক পারমিট হল কাজের সম্মতিপত্র। যে কম্পানির সাথে আপনি কাজের চুক্তি করবেন তারাই আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ব্যবস্থা করে দেবে।

এরপর আপনার লাগবে রেসিডেন্স পারমিট। শ্রীলংকায় বেশিদিন থাকার অনুমতিপত্রই হল রেসিডেন্স পারমিট ।এরপর লাগবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট (সার্কুলারে প্রদত্ত শর্ত অনুযায়ি)। আপনি যদি স্পন্সর ভিসায় যেতে চান তাহলে গ্যারান্টর বা স্পন্সরকারী কোম্পানির ইনভাইটেশন লেটার লাগবে। এসব কাগজের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ,মেডিকেল সার্টিফিকেট ও ভিসা ফি পেমেন্ট রশিদ লাগবে।

শ্রীলঙ্কা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ শ্রীলঙ্কা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য  স্কলারশিপ পেয়ে থাকলে স্ক্লারশিপ লেটার ,বৈধ পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, স্নাতক/স্নাতকোত্তর পাসের সার্টিফিকেট, সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়নপত্র, রেসিডেন্স পারমিট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট (সার্কুলারের নির্দেশনা অনুযায়ী), পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট , মেডিকেল ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয়পত্র / জন্ম সনদ এসব কাগজপত্র প্রয়োজন হয়।

শ্রীলঙ্কা ভিসা টাইপ

শ্রীলঙ্কা ভিসা টাইপ আপনার শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে। আপনি যে কাজের জন্য শ্রীলঙ্কা যাবেন তার জন্য উপর্যুক্ত ভিসাই আপনাকে নির্বাচন করতে হবে। অন্যথায় আপনি বৈধভাবে শ্রীলঙ্কা যেতে পারবেন না। চলুন জেনে নেই শ্রীলঙ্কার ভিসা টাইপ যা আপনাকে সঠিক ভিসা বাছাই করতে সাহায্য করবে।

শ্রীলংকায় সাধারণত দুই ধরনের ভিসা পাওয়া যায়। একটি হচ্ছে লং টার্ম ভিসা অন্যটি শর্ট টার্ম ভিসা. যেসব ভিসার মেয়াদ ৩০ দিনের কম সেসব মূলত শর্ট টার্ম ভিসার আওতাধীন যেমন ভিজিট ভিসা, ব্যবসায় ভিসা, মেডিকেল ভিসা  ইত্যাদি। আপনি যদি ৩০ দিনের কম সময় শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করতে চান তাহলে আপনাকে এই ক্যাটাগরির ভিসা নিতে হবে। এই ভিসায় আপনাকে রেসিডেন্স পারমিট নিতে হবে না। এটি ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন সিস্টেমের আওতাভুক্ত।

লং টার্ম ভিসা হলো যেসব ভিসার মেয়াদ সাধারণত ১ বছর থেকে ৫ বছর বা তার অধিক হয়ে থাকে। চাকরি, পড়াশোনা, পরিবার নিয়ে শ্রীলঙ্কা বসবার বা কাজের জন্য এই ভিসা দেয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনি যদি ৩০ দিনের বেশি ১ বছর থেকে ৫ বছর সময় শ্রীলঙ্কা অবস্থান করতে চান তাহলে আপনার লং টার্ম ভিসা নিতে হবে। লং টার্ম ভিসার ক্ষেত্রে কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট, পড়াশোনার জন্য স্টাডি ভিসা, পরিবার নিয়ে থাকলে স্পাউস ভিসা নিতে হবে। তবে সব ভিসার ক্ষেত্রে আপনাকে রেসিডেন্স পারমিট অবশ্যই নিতে হবে।

রেসিডেন্স পারমিট হলো শ্রীলঙ্কায় থাকার মতো দীর্ঘস্থায়ী আবাসন সুবিধা পাওয়ার বৈধতা। সহজ ভাষায় বলতে গেলে আপনি যদি শর্ট টার্ম ভিসায় যান তাহলে আপনি হোটেলে উঠতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি লং টার্ম ভিসায় যান সেক্ষেত্রে হোটেলে উঠতে পারবেন না, বাসা ভাড়া নিতে হবে। এই দীর্ঘদিন থাকার জন্য যে বাসা ভাড়া বা আবাসন আপনি নিবেন তার অনুমতিপত্রই হলো রেসিডেন্স পারমিট। শ্রীলঙ্কার ইমিগ্রেশন অফিস থেকে এটি সংগ্রহ করতে হয়। সাধারণত শ্রীলঙ্কা যাওয়ার ২/৩ দিনের মধ্যেই ইমিগ্রেশন অফিসে যোগাযোগ করলে এই পারমিট পেয়ে যাবেন।
শ্রীলঙ্কা-ভিসা-টাইপআরও একটি ভিসা চালু আছে শ্রীলঙ্কায় যেটা ট্রানজিট ভিসা নামে পরিচিত। এটি লং টার্ম বা শর্ট টার্ম কোনো ভিসার আওতায়ই পড়ে না। অন্য দেশে যাওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কায় বিরতি দেওয়া হলে ২৪-৪৮ ঘন্টা শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করার অনুমতিপত্রকেই ট্রানজিট ভিসা বলে। আপনি কোন উদ্দেশ্যে শ্রীলঙ্কায় যেতে চান সেই অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার ভিসা টাইপ সিলেক্ট করুন এবং ভিসার জন্য আবেদন করুন।

বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কা যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কা যেতে কত টাকা লাগে তা নির্ভর করবে আপনি কি ভিসায় যাবেন, কতজন মিলে যাবেন এবং কতদিন শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করবেন তার উপর। আপনার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে ওয়েবসাইট অথবা হাইকমিশনে খোজ নিলেই আপনার অনুমানিক কত টাকা লাগবে তা জানতে পারবেন। আমরা আপনার জানার সুবিধার্থে কিছু তথ্য  দিতে পারি বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার খরচ সম্পর্কে। 

আপনি যদি ৩০ দিনের কম মেয়দি অর্থাৎ শর্ট টার্ম ভিসায় শ্রীলঙ্কা যেতে চান তাহলে আপনার সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা ফি ২০ ডলার ( প্রায় ২৫০০ টাকা) এবং মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা ৩০ ডলার (প্রায় ৩৫০০ টাকা) লাগবে ভিসা ফি। আর যাি দীর্ঘমেয়াদি লং টার্ম ভিসায় যান তাহলে আপনার ভিসা ফি লাগবে ৫০ ডলার বা প্রায় ৭০০০ টাকার মতো। এটা হলো ভিসা ফি। এর সাথে বিমানের টিকেট, ভিসা প্রসেসিং ফি ও অন্যান্য খরচ সহ শর্ট টার্ম ভিসায় ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা এবং লং টার্ম ভিসার জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা লাগতে পারে। 
তথ্যসূত্রঃ https://www.eta.gov.lk  , https://www.srilankan.com/ 

শ্রীলঙ্কা কাজ করতে কি ভিসা লাগে 

শ্রীলঙ্কা কাজ করতে কি ভিসা লাগে এই প্রশ্নটা অনেকেই করে থাকেন কারন বর্তমানে বিদেশে গিয়ে চাকরি করে ক্যারিয়ার গড়ার প্রতি সবার আলদা ঝোঁক রয়েছে। তবে বিদেশে চাকরি করতে গেলে সেই দেশের ভিসা সম্পর্কে আপনাকে অবসসই জানতে হবে নইলে সমস্যায় পরতে পারেন। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আলোচনা করব শ্রীলঙ্কায় কাজ করতে কি ভিসা লাগে সেই বিষয়ে বিস্তারিত। 

শ্রীলঙ্কায় কাজ করার ইচ্ছা থাকলে দরকার কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট, রেসিডেন্স পারমিট। ওয়ার্ক পারমিট হলো এমন এক ভিসা যা শ্রীলঙ্কায় কোন বিদেশি নাগরিক কে কোন নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ করে দেয়। এই ভিসায় মেয়াদ নির্ধারণ করে দেওয়া হয় এবং প্রতি বছর নবায়ন করা যায়।তবে আমাদের জানতে হবে এই ভিসা কারা পাবে? যারা কোন নির্দিষ্ট কম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন, কোন আন্তর্জাতিক মানের এনজিও তে কাজ বা বিদেশি কোন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করবেন অথবা স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিষয়ে কাজ করবেন, শ্রমিক, ওয়েটার, সেফ, কন্সট্রাকশন ইত্যাদি কাজে শ্রীলঙ্কা যাবেন শুধু এই ভিসা পাওয়ার যোগ্য।

এই ভিসার আওতায় শ্রীলঙ্কা কাজের মোট ১০-১২ টি ক্যাটাগরি অন্তর্ভুক্ত আছে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার পর রেসিডেন্স পারমিট নিতে হয় শ্রীলঙ্কা গিয়ে দীর্ঘদিন অবস্থান করার জন্য। শ্রীলঙ্কার কাজ করতে ভিসা পাওয়ার জন্য কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয় যেমনঃ প্রথমে নিয়োগকারী কোম্পানির সাথে চুক্তি করা অর্থাৎ ওখানে গিয়ে আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করবেন তাদের সাথে চাকরির বেতন, ডিউটি টাইম, সুযোগ সুবিধা আলোচনা করে কাজের মেয়াদ সংক্রান্ত একটি চুক্তিপত্র সম্পাদন করবেন।

এরপর আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করবেন। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে গেলে আপনি অন্যান্য কাজ সম্পূর্ণ করে শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার পর রেসিডেন্স পারমিট নেবেন। ওয়ার্ক পারমিট নেওয়ার জন্য যাবতীয় কাজ আপনি বাংলাদেশ থেকেই করতে পারবেন তবে রেসিডেন্স পারমিট শ্রীলঙ্কা যাওয়ার পর নিতে হবে। নিয়োগকারী কোম্পানি নিজে থেকে আপনাকে এই কাজে সাহায্য করবে।

শ্রীলঙ্কা টুরিস্ট ভিসা

শ্রীলঙ্কা টুরিস্ট ভিসা সাধারণত শর্ট টার্ম ভিসা হয়ে থাকে। এই ভিসায় শ্রীলঙ্কা গেলে আপনি ৩০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারবেন। তবে ডাবল এন্ট্রি সুবিধা নিলে আপনি প্রথম ট্যুর শেষ করার মেয়াদ ৩০  দিন না পূর্ণ হতে যদি ফেরত আসেন তাহলে ৬০দিন বা ৯০ দিন পর্যন্ত পুনরায় শ্রীলঙ্কায় ডাবল এন্ট্রি টুরিস্ট ভিসায় যেতে পারবেন।
শ্রীলঙ্কা-টুরিস্ট-ভিসাটুরিস্ট ভিসায় সাধারণত মানুষ শ্রীলঙ্কায় ভ্রমন করতেই বেশি যায়। শ্রীলংকার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য অনেকেই শ্রীলংকা গিয়ে থাকেন। আবার অনেকে আছেন যাদের আত্মীয় স্বজন শ্রীলঙ্কায় থাকেন তাদের সাথে কিছু সময় দেখা করার জন্য শ্রীলঙ্কা গিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে টুরিস্ট ভিসা প্রযোজ্য হবে। ঘুরতে যাওয়ার জন্য হলে আপনি এজেন্সি বা ট্যুর গাইড ঠিক করতে পারেন। এতে আপনার হয়রানি এবং অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং আবেদনের নিয়ম আমরা আর্টিকেলের শুরুতে আলোচনা করেছি। 

FAQ/প্রশ্নত্তর পর্ব

প্রশ্ন ১ঃ বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কান হাই কমিশন কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃ বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কান হাই কমিশনের ঠিকানাঃ 
 হাই কমিশন অফ শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ 
ঠিকানাঃ হাউজ নং ১০, রোড নং ৬২, গুলশান ২, ঢাকা ১২১২, বাংলাদেশ। 
ফোনঃ +৮৮০-২৮৮২২৭৯০, +৮৮২৮৮১০৭৯৯
ইমেইলঃ slhc.dhaka@mfa.gov.lk
ওয়েবসাইটঃ www.slhcdhaka.org
প্রশ্ন ২ঃ শ্রীলঙ্কার ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা?
উত্তরঃ শ্রীলঙ্কার টাকার নাম শ্রীলঙ্কান রুপি। শ্রীলঙ্কার টাকা মান বাংলাদেশের চাইতে কম। শ্রীলঙ্কান ১ রুপি বাংলাদেশের ৪০ পয়সার সমান। বাংলাদেশের ১ টাকা শ্রীলঙ্কান ২.৫০ টাকা প্রায়। 
প্রশ্ন ৩ঃ শ্রীলঙ্কান ফ্লাইট কত সময় লাগে?
উত্তরঃ শ্রীলঙ্কান ফ্লাইট অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কা যেতে গড়ে ৩ ঘন্টা ১৫ মিনিট থেকে ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগে। 
প্রশ্ন ৪ঃ শ্রীলঙ্কা টুরিস্ট ভিসা কিভাবে পাওয়া যায়?
উত্তরঃ অনলাইনে শ্রীলঙ্কার ইমিগ্রেশন অফিসের ওয়েবসাইট থেকে ইলেকট্রনিক ভিসা অথরাইজেশন (ETA) সিস্টেমের মাধ্যমে আবেদন করে খুব সহজেই টুরিস্ট ভিসা পাওয়া যায়। এই ভিসার মেয়াদ সাধারণত ৩০ দিন তবে ৯০ দিন পর্যন্ত বাড়ানো যায়।
প্রশ্ন ৫ঃ শ্রীলঙ্কা স্টুডেন্ট ভিসা কিভাবে পাব?
উত্তরঃ শ্রীলঙ্কা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার আগে ইউনিভার্সিটি থেকে স্কলারশিপ বা সিলেকশনের কনফার্মেশন লেটার পেতে হয়। তারপর অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করার পর অন্যান্য ভিসার নিয়মেই বাকি কাজ করতে হবে।

লেখকের শেষ কথাঃ বাংলাদেশ টু শ্রীলঙ্কা বিমান ভাড়া কত

বাংলাদেশ টু শ্রীলঙ্কা বিমান ভাড়া কত তা নির্ভর করে ভিসার ধরন, ভ্রমনের উদ্দেশ্য, সময় ইত্যাদি কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর। আপনি যদি নিজে নিজে শ্রীলঙ্কা ভিসা বুকিং সহ ভিসা প্রসেসিং এর কাজ করতে চান তাহলে বিস্তারিত জেনে ধাপে ধাপে এগোতে হবে।

আজকে আমরা শ্রীলঙ্কার ভিসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি যেটার মাধ্যমে আপনি অনেক কিছুই জানতে পারবেন। এরপরও যদি কোনো বিষয়ে সমস্যা থাকে তাহলে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কান হাইকমিশনে যোগাযোগ করতে পারেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফ্রিলার্নিং আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url